কক্সবাজারে ৩৮ কোটি টাকায় হচ্ছে ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র

এম. বেদারুল আলম :

সরকার উপকূলীয় এলাকার মানুষের নিরাপত্তার জন্য কক্সবাজার জেলায় আরো ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান করছে। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয়ের দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান কাজ চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রের ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তার। অবশিষ্ট কাজ আগামি জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান শেষ হলে জেলার ২০ হাজার উপকূলীয় দূর্যোগ প্রবন মানুষ এ প্রকল্পের সুফলের আওতায় আসবে।

জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিন মুকুল জানান, সারা দেশের ৩টি বিভাগের ২৬ জেলার ৮৬টি উপজেলায় ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মান করছে সরকার। তৎমধ্যে কক্সবাজারের ৮ উপজেলায় ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মান ব্যয় ২ কোটি টাকা। উপকূলীয় ও ঘূর্ণিঝড় প্রবন এলাকায় বহুমূখী ঘূর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মান প্রকল্প ( ২য় পর্যায় ) এর আওতায় নির্মিত ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা থাকছে।

নির্মানাধীন আশ্রয় কেন্দ্র সমূহ হলো বড় মহেশখালী আইল্যান্ড হাই স্কুল বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র,  ছোট মহেশখালী আহমদিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্র, কালামারছড়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র, কুতুবজোম অপসোর হাইস্কুল বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র , শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র, বারবাকিয়া ফাসিয়াখালী ফাজিল মাদ্রাসা বহুমুখী আশ্রয়কেন্দ্র, রাজাখালী বেসারাতুল উলুম ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র, পূর্ব বড় ভেওলা জয়নাল আবেদীন মহিউচ্চুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা আশ্রয়কেন্দ্র, বদরখালী আল আজহার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, চৌফলদন্ডী সাগরমনি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, পিএমখালী উত্তরপাতলী আবু বক্কর ছিদ্দিক রা. দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্র, সাবরাং শাহপুরির দ্বীপ হাজি বশির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, টেকনাফ বর্ডারগার্ড পাবলিক স্কুল কেন্দ্র, লেমশীখালী সতর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, উত্তর ধুরুং উত্তরণ বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র, মাদারবুনিয়া ছেপটখালী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, বালুখালী কাশেমিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, রামু মনসুর আলী সিকদার আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্র, জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র।
উক্ত আশ্রয়কেন্দ্র নিমার্নের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- দরিদ্র জনগোষ্ঠির দূর্যোগে আশ্রয়, তাদের গবাদিপশু ও জানমালের নিরাপত্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে তথা জনহিতকর কাজে ব্যবহার।

এদিকে উক্ত আশ্রয়কেন্দ্রসমুহে থাকছে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য উঠানামার রেম্প, গর্ভবর্তীদের ও শিশুদের জন্য ২য় তলায় আলাদা আশ্রয়কক্ষ, ২য় ও ৩য় তলায় আশ্রয় কেন্দ্র, ৪৪০ কিলোওয়াটের সৌর প্যানেল, গবাদি পশুর আশ্রয়ের জন্য বিশেষ শেড। প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গায় এ কারনে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শ্রেণিকার্যক্রমের জন্য উক্ত আশ্রয়কেন্দ্র সমুহ ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা দূর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিন মুকুল। তিনি জানান- প্রতিটি আশ্রয় কেন্দ্রের আয়তন ৭৮০ বর্গ মিটারের যার কারনে ৮’শ মানুষ এবং ৩’শ গবাদি পশু আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবে দূর্যোগকালিন সময়ে।

উল্লেখ্য, জেলায় উক্ত আশ্রয় কেন্দ্রছাড়া ও ৮৩৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে । স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত হচ্ছে আরো ৩৯টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। সরকার উপকূলীয় এলাকার অসহায় দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠির নিরাপত্তা নিশ্চিতে উক্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মান করতে যাচ্ছে যা দূর্যোগপ্রবণ কক্সবাজারের জন্য মাইল ফলক হয়ে থাকবে। নির্মানকাজে স্বচ্ছতা ও যথাসময়ে নির্মান কাজ শেষ হলে এ প্রকল্পের সফলতা সরকারের উন্নয়ন ধারাবাহিতকাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।